রবিবার ৫ অক্টোবর ২০২৫ - ১৬:২১
কেন আল্লাহ এই দুনিয়ায় চরম জালিমদেরও তৎক্ষণাৎ শাস্তি দেন না?

মানুষের জীবনের বাহ্যিক সুখ বা দুঃখই আল্লাহর ন্যায়বিচারের মানদণ্ড নয়। আল্লাহ তায়ালা সৎ মানুষদের কোনো ভুল হলে দ্রুতই সতর্ক করে দেন ও সংশোধনের সুযোগ দেন, কিন্তু যারা গভীরভাবে পাপাচারে নিমজ্জিত, তাদের তিনি অবকাশ দেন—যাতে কিয়ামতের দিনে তাদের পূর্ণ হিসাব নেওয়া যায়। তাই দুনিয়ার আরাম-আয়েশ কিংবা কষ্ট—কোনোটিই আল্লাহর নিকটবর্তীতা বা দূরত্বের প্রকৃত চিহ্ন নয়।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইরানের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ও কুরআনের মুফাস্সির হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন হুজ্জাতুল্লাহ কারআতী (আল্লাহ তাঁকে হেফাজত করুন) এক বক্তৃতায় “যুবসমাজের মনে উদ্ভূত প্রশ্ন: কেন দুনিয়ায় জালিমদের শাস্তি দেওয়া হয় না?”—এই বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা প্রদান করেন।

তিনি বলেন, অনেক তরুণের মনে প্রশ্ন জাগে— যখন বলা হয়, “মানুষ গোনাহ করলে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়”, তখন তারা বলে, “তাহলে কেন কিছু ধর্মহীন দেশেও মানুষ সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে, প্রচুর বৃষ্টি হয়?”
আবার কেউ বলে, “অন্যায় করলে তার ফল ভোগ করতে হয়”, কিন্তু দেখা যায়, কেউ কেউ আরও বড় অন্যায় করে তবুও আরামদায়ক জীবন যাপন করে।

এই প্রশ্নের উত্তর বোঝাতে তিনি একটি সহজ উদাহরণ দেন— যদি এক ফোঁটা চা চশমায় পড়ে, সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা মুছে ফেলি।
কিন্তু সেই ফোঁটা যদি জামায় পড়ে, তা পরিষ্কার করা কিছুটা কঠিন এবং সেটা বুঝতেও সময় লাগে। আর যদি সেটা কার্পেটে পড়ে, তখন হয়তো আর কিছুই করার থাকে না।

ঠিক তেমনি, আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের সঙ্গেও এমন আচরণ করেন— যদি একজন সৎ মানুষ কোনো ভুল করে ফেলে, আল্লাহ দ্রুতই তাকে সতর্ক করেন ও তওবার সুযোগ দেন।

কিন্তু যে ব্যক্তি গভীরভাবে পাপাচারে রেঁধে গেছে, আল্লাহ তাকে সময় দেন—যেন সে নিজের পথ বেছে নেয়। তার চূড়ান্ত বিচার কিয়ামতের দিনের জন্য স্থগিত থাকে।

অতএব, কেবল দুনিয়াবি অবস্থার উপর ভিত্তি করে আল্লাহর ন্যায়বিচার সম্পর্কে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ভুল।

আল্লাহর বিচার কখনো বিলম্বিত হতে পারে, কিন্তু তা অনিবার্য—এবং চূড়ান্তভাবে পরিপূর্ণ ন্যায়েই সম্পন্ন হবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha